October 18, 2024, 6:23 pm
খলিলুর রহমান খলিল, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রংপুরের তারাগঞ্জে আমনের ভরা মৌসুমে রাসায়নিক সারের সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষকরা হন্যে হয়ে ধরনা দিয়েও সার পাচ্ছে না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উর্মি তাবাসসুমের দায়িত্বের অবহেলার কারণে খুচরা রাসায়নিক সার ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করছে । এতে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভবান হচ্ছেন সার ব্যবসায়ী ও কৃষি কর্মকর্তা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ অফিস সূত্রে জানা গেছে, তারাগঞ্জ উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নের ১১৫৪৭ হেক্টর আবাদি জমি রয়েছে । কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টির অভাবে কৃষকেরা এবছর সেচের মাধ্যমে আমনের আবাদ লাগিয়েছে । আমান লাগানোর সময় তারা পটাশ দিতে পারেনি। এখন তারা ওই পটাশ সার (এমওপি) খুজে পাচ্ছে না অথচ কৃষি কর্মকর্তার নাকের ডগার নিচ দিয়ে খুচরা সার ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দামে ওই সার বিক্রি করছে ।
স্হানীয় প্রশাসন অভিযান চালিয়ে সার অতিরিক্ত দামে বিক্রি করার অভিযোগে মাত্র দুইজনকে জরিমানা করলেও কৃষি কর্মকর্তার নেই কার্যকরী ভূমিকা । তিনি মাঠ পর্যায়ে না গিয়ে, বাইরের জেলায় তেল পুড়িয়ে বেড়াচ্ছেন । এই সুযোগে খুচরা সার ব্যবসায়ীরা কৃষকদের জিম্মি করে চরা দামে বিক্রি করে অধিক মুনাফা লুফে নিচ্ছে ।
সার মনিটরিং ব্যবস্থার এমন বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্ট কৃষক , সচেতন নাগরিক ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীরা। তারা বলেন কৃষি কর্মকর্তার কর্মের গাফলতির কারণে সার ব্যবস্থাপনায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে যা গত এক দশকের মধ্যে সকল অব্যবস্থাপনার মাত্রা ছড়িয়ে গেছে । এই কর্মকর্তার এমন কর্মকান্ডে সরকারের অর্জিত কৃষি বান্ধব ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে ।
অভিযোগ রয়েছে ওই কৃষি কর্মকর্তা তাবাসসুম কর্মস্থলে অবস্থান না করে তিনি অন্য জেলায় অবস্হান করেন । সরকারি গাড়িও ব্যাবহার করেন ব্যাক্তিগত কাজে।
তিনি কৃষকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন । ফোন দিলেও রিসিভ করেন না , চলেন খেয়াল খুশিমত। তার এসব অনিয়মের কারণে অতিষ্ট হয়ে ওঠেছে তারাগঞ্জে কৃষক । তিনি সরকার দলীয় বিভিন্ন মন্ত্রীর আত্বীয়র পরিচয় দিয়ে অনিয়ম অব্যাহত রাখায় সরকারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে । আওয়ামীলীগের নেতকর্মীরাও তার এমন আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন।
হরিয়ারকুঠি ইউনিয়নের সোনা মিয়া বলেন , কৃষি কর্মকর্তা ঘরত বসি বেতন খাওচে আর দোকানদার হামার কাচত বেশি দামে সার বেচাওছে । যায় হামার উপকারত আইসেছেনা তাক সরকার বেতন দেয় কেনে ?
কুর্শার মনসুর আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হামার উপজেলার কৃষি অপিসার তারাগঞ্জে থাকে না, হামার ফসল দেইপারো আইসে না। রোগ বালাই সারার পরামর্শ দেয় না। চাকরী করে তারাগঞ্জে থাকে সৈয়দপুরে এই জন্যে তারাগঞ্জের সার ব্যবসারী লুটিপুটি খাওচে, তার ভাগ বসি থাকি নেওচে। ওই জন্যে অভিযোগ করলেও কোন কাম হওচে না।
আলপুর ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রাসেল বলেন, এই কৃষি অফিসারের সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না। আমার এলাকায় পুনর্বাসন ও পুনর্দনা বন্টন নিয়ে বেশ ঝামেলা হয়েছে। পছন্দের এবং একই লোক বারবার সুবিধা পায়। এছাড়াও ইট ভাটায় শত একর আবাদি জমির টপ সয়েল রক্ষায় কোন ভুমিকা রাখছেন না। অভিযোগের বিষয়ে জানতে মুঠো ফোনে উর্মি তাবাসসুমের কাছে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে মুঠোফোন কেটে দেন।